টাঙ্গাইল যুবলীগ নেতা ফিরোজ হত্যা মামলা
১০ বছর যাবত বিচারের অপেক্ষায় বৃদ্ধ বাবা মা
দেলোয়ার প্রতিনিধি: টাঙ্গাইলের দেলদুয়ার উপজেলার বহুল আলোচিত যুবলীগ নেতা ফিরোজ আল-মামুন হত্যা মামলার বিচার ১০ বছরেও শেষ হয়নি। বিচারের দাবিতে বিভিন্ন সময় মানববন্ধনসহ বিভিন্ন আন্দোলন করলেও বিচার পায়নি তার পরিবার। ফলে বিচারের অপেক্ষার প্রহর গুণছে তার বৃদ্ধ বাবা মা। এ দিকে মামলার আসামীরা জামিনে মুক্ত হয়ে মামলা তুলে নিতে বাদিকে হুমকি ধামকি দিচ্ছে। ফিরোজ আল-মামুন উপজেলার আগ এলাসিন গ্রামের আলম মিয়ার ছেলে।
মামলা ও তার পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, ফিরোজ আল-মামুনের সাথে ধলেশ্বরী নদীতে নির্মানধীন ব্রীজের বালু ও পাথর সরবরাহের ব্যবসা, টেম্পু অটো রিক্সা শ্রমিক সমিতির নির্বাচন ও প্রতিবেশি জাহাঙ্গীরের মাদক ব্যবসাকে কেন্দ্র করে প্রতিপক্ষের সাথে দ্বন্দ শুরম্ন হয়। এর সূত্র ধরে ফিরোজ আল-মামুনকে বিভিন্ন সময় হুমকি ধামকি দেয়া হতো। এরই ধারাবাহিকতায় ২০১২ সালের ১২ এপ্রিল রাতে মোটরসাইল নিয়ে ফিরোজ আল-মামুন বাড়ি ফিরছিলেন। তার বাড়ির কাছাকাছি আসার পর জাহাঙ্গীর, আনিছুর রহমান, কালু, রবি ও আমিনসহ অজ্ঞাত ৩/৪জন ধারালো অস্ত্র দিয়ে এলোপাথারী কুপিয়ে ও হাতুরী দিয়ে পিটিয়ে ফিরোজ আল-মামুনকে রাস্তায় ফেলে দেয়। পরে স্থানীয়রা উদ্ধার করে তাকে টাঙ্গাইল জেলারেল হাসপাতালে ভর্তি করে। রাতেই চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃতু্য হয়। এ ঘটনায় নিহত ফিরোজ আল-মামুনের মা মোছা. শামছুন্নাহার বাদি হয়ে পরদিন ১৩ এপ্রিল দেলদুয়ার থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন। মামলায় দেলদুয়ার উপজেলার আগ এলাসিন গ্রামের মৃত মান্নান মিয়ার ছেলে জাহাঙ্গীর (৩২), চকতৈল গ্রামের মৃত আব্দুল সামাদের ছেলে আনিছুর রহমান (৪২), মৃত শাহজাহান খলিফার ছেলে কালু (৩৮), মৃত আনোয়ারের ছেলে রবি (৩৩), মৃত দিদার মুন্সির ছেলে আমিনের (৩৫) নাম উলেস্নখসহ অজ্ঞাত আরোও ৩/৪জনকে আসামী করা হয়।
পরে পুলিশ মামলার আসামী জাহাঙ্গীর, রবি, রম্নহুল আমিন, হাসান ও আতিক কে গ্রেফতার করে আদালতে পাঠান। মামলার অপর আসামী কালু, আনিছুর রহমান, আমিন আদলতে হাজির হয়ে জামিনের আবেদন করলে বিচারক তাদের জামিন মঞ্জুর করেন। মামলার তদন্তকারী অফিসার তাদের বিরম্নদ্ধে আদলতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন।
ওই বছরের ২১ এপ্রিল টাঙ্গাইল চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট শেখ নাজমুল নাহারের আদালতে দেলদুয়ার উপজেলার আগ এলাসিন গ্রামের মৃত ফজল মিয়ার ছেলে রম্নহুল আমিন স্বীকারোক্তি মূলক জবানবদ্ধি প্রদান করেন।
মামলার বাদি মোছা. শামছুন্নাহার ও বাবা আলম মিয়া জানান, আমরা বেঁচে থাকা অবস্থায় কি পুত্র হত্যাকারীদের বিচার দেখে যেতে পাবো না। আমার ছেলেকে যারা অন্যায় ভাবে হত্যা করেছে তাদের দৃষ্টান্ত্মমুলক বিচার দাবি করি। ছেলে হত্যাকারীদের বিচার দেখে যেতে পারলে মরেও আমরা শান্তি পাবো।