ডাকাতি মামলার যাবজ্জীবন সাজা প্রাপ্ত আসামি ৩৩ বছর পর র্যাব-১৪, সিপিসি-৩, টাঙ্গাইল ক্যাম্পের হাতে গ্রেফতার
মোঃ তাইজুল ইসলাম : ৩৩ বছর ধরে ডাকাতি মামলায় যাবজ্জীবন সাজা থেকে বাঁচার চেষ্টা করেও নিজ নাম এবং পিতার নাম পরিবর্তন করে এনআইডি প্রস্তুত করেও শেষ রক্ষা পেল না পলাতক আসামী শফিকুল ইসলাম ওরফে পাকুল ( আগুন পাগলা)। অবশেষে র্যাব-১৪, সিপিসি-৩, টাঙ্গাইল ক্যাম্পর তাকে গ্রেফতার করেছে।
র্যাব-১৪, সিপিসি-৩, টাঙ্গাইল র্যাব ক্যাম্পের একটি আভিযানিক দল গোপন সংবাদের ভিত্তিতে জানতে পারেন যে, টাঙ্গাইল জেলার বাসাইল থানার ১৯৮৪ সালের চাঞ্চল্যকর ডাকাতি মামলার যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত পলাতক আসামী শফিকুল ইসলাম পাকুল, পিতা- মুকছেদ আলী, গ্রাম- গিলাবাড়ী, থানা-বাসাইল, জেলা-টাঙ্গাইল নারায়নগঞ্জ জেলার সিদ্ধিরগঞ্জ থানাধীন সিদ্ধিরগঞ্জ পুল এলাকায় তাহার কন্যার ভাড়া বাসায় আত্মগোপনে রয়েছে। উক্ত তথ্যের ভিত্তিতে, র্যাব-১৪, সিপিসি-৩, টাঙ্গাইল ক্যাম্পের একটি আভিযানিক দল ০৬ জানুয়ারী ২০২৩ খ্রিঃ রাত অনুমান ০১.৩০ ঘটিকায় নারায়নগঞ্জ জেলার সিদ্ধিরগঞ্জ থানাধীন সিদ্ধিরগঞ্জ পুল এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে আসামী শফিকুল ইসলাম পাকুল কে গ্রেফতার করেন।
উল্লেখ্য যে, টাঙ্গাইল জেলার বাসাইল থানার মামলা নং-০৪, তারিখ- ২৯/০৯/১৯৮৪ খ্রিঃ, ধারা- ৩৯৫/৩৯৭ দন্ডবিধি এ বিজ্ঞ আদালত ১৯৮৯ সালে উক্ত আসামীকে যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদন্ডে দন্ডিত করেন। উক্ত মামলা বিচার চলাকালীন সময় থেকেই আসামী শফিকুল ইসলাম পাকুল (আগুন পাগলা) পলাতক ছিলেন।
উক্ত আসামী যাবজ্জীবন কারাদন্ড থেকে বাঁচার জন্য তাহার নিজের নাম শফিকুল ইসলাম পাকুল পরিবর্তন করে মোঃ হেলাল উদ্দিন চিশতী ও পিতার নাম মুকছেদ আলী পরিবর্তন করে মোসলেম উদ্দিন চিশতী নাম ধারণ করে জাতীয় পরিচয় পত্র তৈরী করে এবং উক্ত জাতীয় পরিচয়পত্র নং-৩২৯৮৭০০১৪১ এ গ্রাম/রাস্তা- দেলুটিয়া, ডাকঘর-ভাবনদত্ত-১৯৭০, থানা-ঘাটাইল, জেলা-টাঙ্গাইল ঠিকানা ব্যবহার করে আসছে। আসামীকে প্রাথমিকভাবে জিজ্ঞাসাবাদ করলে সে প্রথমে অস্বীকার করলেও ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদে সে তার প্রকৃত নাম ঠিকানা শফিকুল ইসলাম পাকুল, পিতা- মুকছেদ আলী, গ্রাম- গিলাবাড়ী, থানা-বাসাইল, জেলা-টাঙ্গাইল হিসেবে স্বীকার করে। এছাড়াও তিনি জানান যে, উপরোক্ত মামলা রুজু হওয়ার পর থেকে তিনি কোথাও স্থায়ীভাবে বসবাস না করে বিভিন্ন সময় দেশের বিভিন্ন এলাকায় অস্থায়ীভাবে বসবাস করে আসছিলেন এবং বিভিন্ন মাজারে ভক্তিমূলক গানের দলে নিয়মিত অংশগ্রহণ করতেন। মাজার এলাকাগুলোতে সে নিজেকে আগুন পাগলা হিসেবে পরিচয় দিত। এ কাজে সে কিছু কুচক্র মহলের পরামর্শে নাম ঠিকানা পরিবর্তন করে এনআইডি কার্ড তৈরী করে শফিকুল ইসলাম পাকুল এর পরিবর্তে মোঃ হেলাল উদ্দিন চিশতী এবং কখনো কখনো আগুন পাগলা নাম ধারণ করে আসছিল।
উক্ত গ্রেফতারকৃত আসামীকে গ্রেফতারী সাজা ওয়ারেন্ট মূলে টাঙ্গাইল জেলার বাসাইল থানায় হস্তান্তর করাহয়েছে ।
র্যাব-১৪ সিপিসি-৩, টাঙ্গাইল ক্যা¤প। কোম্পানী অধিনায়ক সিনিয়র সহকারী পরিচালক অতিরিক্ত পুলিশ সুপার রফিউদ্দীন মোহাম্মদ যোবায়ের, পিপিএম এক প্রেস বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
তিনি জানান র্যাপিড এ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব) প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে সবসময় বিভিন্ন ধরণের অপরাধীদের গ্রেফতারের ক্ষেত্রে অত্যন্ত অগ্রণী ভূমিকা পালন করে আসছে। র্যাবের সৃষ্টিকাল থেকে এ পর্যন্ত মাদক ব্যবসায়ী, শীর্ষ সন্ত্রাসী, অপহরণকারী, সন্ত্রাসী, এজাহারনামীয় আসামী, ছিনতাইকারী, চাঁদাবাজ, প্রতারকচক্র,ধর্ষণকারী, পর্ণোগ্রাফি বিস্তারকারী, চোরাকারবারীদের গ্রেফতার করে সাধারণ জনগণের মনে আস্থা অর্জন করতে সক্ষম হয়েছে। সেই ধারাবাহিকতায় এই অভিযান। র্যাবের এধরনের অভিযান চলমান থাকবে।