মির্জাপুরে মেয়ের শ্বশুর বাড়িতে হাসু হত্যার প্রধান আসামী সজলসহ দুইজন গ্রেফতার
মো. আতোয়ার রহমান খান সাদত: টাঙ্গাইলের মির্জাপুরে মেয়ের শ্বশুর বাড়িতে শ্রমিক নেতা ও মির্জাপুর সদরের সমবায় সুপার মার্কেটের নাইট গার্ড আবুল হাসেম ওরফে হাসু মিয়া হত্যার প্রধান আসামী সজলসহ দুই আসামীকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
বিজ্ঞাপন
বুধবার (৫ এপ্রিল) সজলকে মির্জাপুর উপজেলার গোড়াই এলাকা থেকে গ্রেফতার করা হয়। এর আগে অপার আসামী লাইলী বেগমকে সরিষাদাইর এলাকা থেকে গ্রেফতার করা হয। মির্জাপুর থানার অফিসার ইনচার্জ শেখ আবু সালেহ মাসুদ করিম বুধবার রাতে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
বিজ্ঞাপন
বুধবার মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা মো. জাহাঙ্গীর আলম জানান, গত শুক্রবার (৩১ মার্চ) উপজেলার ভাওড়া ইউনিয়নের সরিষাদাইর গ্রামে মো. হাসু মিয়াকে (৬০) নির্মম ভাবে হত্যা করা হয়। তার পিতার নাম মোকছেদ আলী বেপারি। গ্রামের বাড়ি মির্জাপুর পৌরসভার পুষ্টকামুরি মধ্যপাড়া গ্রামে।
তার মেয়ে রুবিনা আক্তারের স্বামী জুয়েল মিয়া দীর্ঘ দিন ধরে প্রবাসে থাকেন। স্বামীর অনুপস্থিতিতে শ্বশুর বাড়ির লোকজন নির্যাতন করে জমি দখলের চেষ্টা করলে রুবিনা তার পিতা হাসু মিয়াকে সংবাদ দেন। গত শুক্রবার তিনি সরিষাদাইর গ্রামে মেয়ের শ্বশুর বাড়ি গেলে মেয়ের শ্বশুর বাড়ির লোকজন হাসু মিয়ার উপর হামলা চালালে তিনি নিহত হন।
বিজ্ঞাপন
নিহত হাসু মিয়ার মেয়ে রুবিনা ঘাতক সজল, আমির হামজা, লাইলী, নিলুফা ও ঝুমাকে আসামী করে মামলা দায়ের করেছেন। মামলার পর আসামীরা আতত্মগোপনে চলে যায়। তথ্য প্রযুক্তি ব্যবহার করে দুই আসামী গ্রেফতার করা হয়। অপর আসামীদের গ্রেফতারে অভিযান চলছে বলে তদন্তকারী কর্মকর্তা জানান।
বিজ্ঞাপন
এর আগে গত গত রবিবার (২ এপ্রিল) হত্যাকারীদের গ্রেফতারসহ ফাঁসির দাবীতে এলাকাবাসী ও নিহত হাসু মিয়ার আত্মীয় স্বজন ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়ক অবরোধ করে মানব বন্ধন ও প্রতিবাদ সমাবেশ করে। ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কের মির্জাপুর পুরাতন বাস স্টেশন এলাকায় ঘন্টা ব্যাপি এ কর্মসুচী পালিত হয়।
বিজ্ঞাপন
মানব বন্ধন ও প্রতিবাদ সমাবেশে বক্তব্য রাখেন, মির্জাপুর পৌরসভার সাবেক মেয়র বীর মুক্তিযোদ্ধা এড. মোশারফ হোসেন মনি, সাবেক মেয়র বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. শহিদুর রহমান শহিদ, উপজেলা পরিষদের সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা সরকার হিতেশ চন্দ্র পুলক, উপজেলা জাতীয় পার্টির সভাপতি ও সাবেক ভিপি মো. আবু আহমেদ, শহীদ ভবানী প্রসাদ সাহা সরকারী কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ মো. সালাউদ্দিন আহমেদ বাবর, পৌর বিএনপির সভাপতি ও সাবেক ভিপি মো. হযরত আলী মিঞা, সাধারন সম্পাদক এস এম মহসীন, আওয়ামীলীগ নেতা মো. বাবুল খান, মো. ফরহাদ উদ্দিন আছু, সৈয়দ ওয়াহিদ ইকবাল এবং মির্জাপুর থানার অফিসার ইনচার্জ শেখ আবু সালেহ মাসুদ করিম প্রমুখ।
এ ব্যাপারে মির্জাপুর থানার অফিসার ইনচার্জ শেখ আবু সালেহ মাসুদ করিম বলেন, মামলায় যাদের আসামী করা হয়েছে তাদের মধ্যে সজল মিয়া এবং লাইলী বেগমকে গ্রেফতার করা হয়েছে। অপর আসামীদের ধরতে তথ্য প্রযুক্তি ব্যবহার করে পুলিশ চিরুনি অভিযান শুরু করেছে। আশা করা হচ্ছে দ্রুত সময়ের মধ্যে আসামীদের গ্রেফতার করা সম্ভব হবে। নিহত হাসু মিয়ার পরিবার যাতে ন্যায় বিচার পান সে জন্য পুলিশ ও প্রশাসনের পক্ষ থেকে তার পরিবারকে সব ধরনের সহযোগিতা দেওয়া হবে।