টাঙ্গাইল চাঞ্চল্যকর মাছ ব্যবসায়ী হত্যা মামলার রহস্য উদঘাটন গ্রেফতা ৩ আদালতে স্বীকারোক্তি মূলক জবানবন্দি।
টাঙ্গাইল পৌরসভার দিঘুলিয়া চাঞ্চল্যকর বাপ্পি হত্যাকান্ডের রহস্য উদঘাটন করেছে পুলিশ জটিকা অভিযানে ঘটনার সাথে জড়িত তিন জন আসামিকে গ্রেফতার এবং বিজ্ঞ আদালতে তিনজন আসামীর স্বীকারোক্তি মূলক জবানবন্দী প্রদান ও হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত দা উদ্ধার। মুলত নিহত বাপ্পির পাপ্পির পার্ক বাজারের দোকান নেয়ার উদেশ্যে বাপ্পির ছোটবেলার ঘনিষ্ঠ বন্ধু সার্বক্ষণিক সঙ্গী তিন বন্ধু ঠান্ডা মাথায় পরিকল্পিত ভাবে কুপিয়ে হত্যা করে মাছ ব্যবসায়ী বাপ্পিকে।
বিজ্ঞাপন
গত ইংরেজি ২৩ মে ২০২৩খ্রি: রাত্রি অনুমান ০১:৪০ঘটিকার সময় টাঙ্গাইল জেলার সদর থানাধীন দিগুলিয়া ব্রিজ হয়ে টাঙ্গাইল শহর থেকে দাইন্না অভিমুখী রাস্তায় দিঘুলিয়া শহীদ মিজানুর রহমান উচ্চ বিদ্যালয় এর সামনে পাকা রাস্তার উপর একজন পুরুষের অজ্ঞাত লাশ পড়ে থাকার খবর পেয়ে পুলিশ দ্রুত ঘটনাস্থলে যায় সেখানে এলাকাবাসী ও ভিকটিমের পরিবারের সদস্যদের খবর দিলে তারা লশ শনাক্ত মতে ডিসিসের নাম আলী আকবর বাপ্পি (৩৮) পিতা :মৃত দেলোয়ার বেপারী মহল্লা দিগুলিয়া পৌর ৪ নং ওয়ার্ড থানা ও জেলা টাঙ্গাইল। ঘটনাটি একটি পরিকল্পিত হত্যাকান্ড ধরে নিয়ে টাঙ্গাইল সদর থানার পুলিশ দ্রুত লাশটি সুরত হাল রিপোর্ট প্রস্তুত করে ময়নাতদন্তের জন্য টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতালে প্রেরণ করেন। ঘটনা সংগঠিত হওয়ার পরপরই মোহাম্মদ সোহেল রানা অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সদর সার্কেল টাঙ্গাইলের নির্দেশনায় অভিযান পরিচালনার জন্য একাধিক টিম গঠন করা হয়।
বিজ্ঞাপন
সুরতহাল শেষে নিহত বাপ্পির লাশ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়। এই হত্যা কান্ডের ধটনা স্থানীয় এবং জাতীয় পত্রিকা সহ বিভিন ইলেকট্রনিক মিডিয়ায় ব্যপকভাবে প্রচারিত হলে এই হত্যা কান্ডটি এলাকায় ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি করে।
ইতিমধ্য ডিজিষ্ট এর মা আজীবন (৫৫) স্বামী মৃত দেলোয়ার বেপারী বাদী হয়ে টাঙ্গাইল সদর থানায় অজ্ঞাতনামা আসামিদের বিরুদ্ধে এজাহার দায়ের পরিপ্রেক্ষিতে টাঙ্গাইল সদর থানা এফ আই আর নং ৩১ তারিখ ২৩ মে ২০২৩ ইং জি আর নং ১৭৮ ধারা ৩০২ / ৩৪ প্যানেল কোড মূলে হত্যা মামলা অজু করা হয়।
বিজ্ঞাপন
মামলা অজু হওয়ার পরেই টাঙ্গাইল পুলিশ সুপার সরকার মোহাম্মদ কায়সারের নির্দেশনায় থানা পুলিশের একটি চৌকস দল অভিযান শুরু করে উক্ত নির্দেশনা মোতাবেক মোঃ সোহেল রানা অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সদর সার্কেল টাঙ্গাইলের সম্বলিত পরিকল্পনায় জনাব মোঃ আবু সালাম মিয়া পিপিএম অফিসার্স ইনচার্জ টাঙ্গাইল সদর থানা টাঙ্গাইলের সার্বিক তত্ত্বাবধানে হাবিবুর রহমান পুলিশ পরিদর্শক তদন্ত এবং তদন্তকারী অফিসার এস আই নিরস্ত্র মুরাদুজ্জামান সহ অন্যান্য অফিসার ফোর্সের অংশগ্রহণের সাঁড়াশি অভিযান চালিয়।
বাপ্পি হত্যার রহস্য উদঘাটনশ বাপ্পি হত্যার মুল ৩ আসামীকে গ্রেফতার করেন সেই সাথে হত্যা কান্ডে ব্যবহৃত ধারাল দা উদ্ধার করেন।
বিজ্ঞাপন
গ্রেফতার কৃত আসামি ১।মোহাম্মদ রাজু আহমেদ হাবলু (৩০) টাঙ্গাইল সাদর পৌরসভার ৪ নং ওয়ার্ড দীগুলিয়া এলাকার নুরু মিয়ার ছেলে। আসামি ২ মোহাম্মদ খোকন (৩১) একই এলাকার ঝন্টু বেপারীর ছেলে। আসামি ৩। গুলি (৩০) একই ওয়ার্ডের পাড়দীঘুলিয়া এলাকার মৃত শহীদ বেপারীর ছেলে।
আসামিদের গ্রেপ্তার পূর্বে জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায় ডিজিষ্ট আলী আকবর বাপ্পি দীর্ঘদিন যাবত পার্ক বাজারে খুচরা মাছ ক্রয় বিক্রয় করে জীবিকা নির্বাহ করে আসছেন। কিছুদিন পুর্ব হতে পার্ক বাজারে দুইটি মাছের দোকান আসামি খোকন, গুলি ও ডিজিস্ট বাপ্পি এই তিনজনের মধ্যে ভাগাভাগি নিয়ে বিরোধ চলে আসছিল। উক্ত দোকান ভাগাভাগিকে কেন্দ্র করে আসামি মোহাম্মদ রাজু আহমেদ হাবলু, খোকন ও গুলি তিনজনে মিলে পরিকল্পনা করে বাপ্পিকে মারপিট করে ভয় দেখিয়ে দুটি দোকানকে তিন ভাগ করে তারা তিন জনের দোকান তিনটি নিয়ে নিবে। আর এই পরিকল্পনা অনুযায়ী গত ২২ মে ২০২৩ খি: অনুমান বিকাল তিনটা থেকে চার ঘটিকার মধ্য কালীপুরে খোকনের অটো গ্যারেজে মোঃ রাজু আহমেদ হাবলু, খোকন ও গুলি বসে পাপ্পিকে হত্যা করার পরিকল্পনা করেন। তাদের পরিকল্পনা মোতাবেক আসামি রাজু আহমেদ হাবলু ডিজিস বাপ্পিকে রাত অনুমান ১০:৩০ ঘটিকায় দিঘুলিয়া ব্রিজের পশ্চিম দক্ষিণ পাশে লৌহজং নদীর পাড়ে বটগাছের তলায় নিয়ে, একটি মেয়েলি বিষয়ে সালিশের ব্যাপারে লোক আসবে টাকা পয়সা নিয়ে এই লোভ দেখিয়ে নদীর পাড়ে বটগাছ নিচে বসিয়ে রেখে, আসামি খোকন ও গুলি আসার জন্য অপেক্ষা করতে থাকে।
বিজ্ঞাপন
এদিকে আসামি রাজু আহমেদ হাবলু গত ২৩-৫-২৩ তারিখ অনুমান রাত ০১:০৯ থেকে ০১:৩০ ঘটিকার মধ্যে মধ্যবর্তী সময়ে আসামি খোকন ও গুলি তাদের হাতে থাকা দা সহ অন্যান্য অস্ত্র নিয়ে ডিজিজের কাছে আসলে প্রথমে আসামি খোকন ডিজিস্ট বাপ্পির কে বসা অবস্থায় পিছন থেকে দা দিয়ে কোপ মারে কোপ খেয়ে বাপ্পি রাস্তার দিকে দৌড় দিলে রাস্তার কোনায় এসে বাপ্পি পা পিছলে পড়ে যায় ওই সময় আসামি রাজু আহমেদ হাবলু খোকন ও গুলি পাপ্পির পিছনে দাপটি সহ অন্যান্য ধারালো অস্ত্র দিয়ে নৃশংস ভাবে মাথা হাত পিঠের বিভিন্ন স্থানে উপর্যপুরি কুপিয়ে ঘটনাস্থল দিঘুলিয়া হইতে টাঙ্গাইল শহর থেকে দাইন্না অভিমুখী রাস্তায় দীঘুলিয়া শহীদ মিজানুর রহমান উচ্চ বিদ্যালয় এর সামনে পাকা রাস্তার উপর ফেলে মৃত্যু নিশ্চিত করে আসামিরা বিভিন্ন দিকে পালিয়ে যায়।
পরবর্তীতে ঊর্ধ্বতম কর্তৃপক্ষের সার্বিক দিকনির্দেশনায় তথ্যপ্রযুক্তি সহায়তায় ও বিশ্বস্ত সোর্সের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে এবং তদন্তকারী অফিসারের দক্ষতা ও পারিপার্শ্বিকতায় আসামিদের গ্রেপ্তার পূর্বক জিজ্ঞাসাবাদ কালে হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত একটি দাও উদ্ধার করা হয় এবং সকল আসামি স্বেচ্ছায় দোষ স্বীকার করে বিজ্ঞ আদালতে ফৌজদারী কার্যবিধি আইনের ১৬৪ ধারা মোতাবেক স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দী প্রদান করেন।
বিজ্ঞাপন
টাঙ্গাইল সদর থানার অফিসার ইনচার্জ মোঃ আবু ছালাম মিয়া ২৭ মে এক প্রেস বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
এদিকে চাঞ্চল্যকর বহুল আলোচিত মাছ ব্যবসায়ী বাপ্পি হত্যার মুল রহস্য উদঘাটন ও আসামি দ্রুত গ্রেফতার হওয়ায় এলাকাবাসী প্রশাসনের প্রশংসা করেছ এবং ধন্যবাদ জানিয়েছেন। নিহত বাপ্পির শোকাহত পরিবার কিছিটা আস্থা পেয়েছে আরা দ্রুত এই আসামীদের বিচারের আওতায় ফঁসি র রায় দিয়ে তা দ্রুত কার্যকর করার দাবী জানিয়েছেন।