টাঙ্গাইল দেলদুয়ারে এক বিধবা নারী ও তার প্রতিবন্ধী মেয়েকে ব্যপক মারধরের অভিযোগ ৷
নিজস্ব প্রতিবেদক : গত ৬ই জুলাই (বৃহস্পতিবার) দেলদুয়ার থানার পাথরাইল পূর্ব পাড়ার মৃত মোশাররফের স্ত্রী ফরিদা(৬০) ও বুদ্ধি প্রতিবন্ধী মেয়ে মোর্শেদা(৩৫) কে একই গ্রামের প্রতিবেশী আব্দুল জলিল মিয়ার দুই ছেলে মঙ্গল (৩৫) ও সোহাগচান(৩০), আব্দুল জলিল মিয়ার স্ত্রী সোহাগী(৫৫) মঙ্গল এর স্ত্রী মীনা এবং মৃত শুকুর মাহমুদের মেয়ে আদুরী (৫০) এই ৫জনে একত্রিত ভাবে বেধড়ক মারধর করে এমন অভিযোগ করছে ৷ বিধবা মহিলা ফরিদা ও তার বুদ্ধিপ্রতিবন্ধী মেয়ে মোর্শেদা গুরুতর আহত অবস্থায় দেলদুয়ার উপজেলা সাস্থ্য কমপ্লেক্স হাসপাতালে ভর্তি হন ১১জুলাই মঙ্গলবার ফরিদা বেগমকে ছুটি দিলেও বর্তমানে প্রতিবন্ধী মোরশেদার শরীরের বিভিন্ন স্থানের জখম গুরুতর হওয়ায় তিনি এখনো চিকিৎসাধীন রয়েছে৷ এ বিষয়ে মোর্শেদা দেলদুয়ার থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দিয়েছে।
বিজ্ঞাপন
মোর্শেদা বর্তমানে দেলদুয়ার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছে৷ তার মাথায় গুরুতর আঘাত সহ সর্বশরীরে মারের কালচে দাগ ও নীলা জখম রয়েছে৷ তার মা ফরিদাকে হাসপাতাল থেকে ছারপত্র দিলেও সে বাড়িতে যেতে নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন তাই মেয়ের সাথে হাসপাতালে মানবেতর জীবনযাপন করছে।
বিজ্ঞাপন
অভিযোগ সুত্রে জানাযায়, মোর্শেদা বাদী হইয়া উপরক্ত ৫ জন কে আসামি করিয়া তিনি অভিযোগ করেন৷ অভিযোগে তিনি জানান, পাশের বড়ির আসামিগনের সাথে জমি নিয়া দীর্ঘদিন যাবত বিরোধ ও শত্রুতা চলে আসছে৷ উক্ত বিরোধের জের ধরিয়া গত ৬ই জুলাই (বৃহস্পতিবার) বিকাল আনুমানিক ০৪:০০ ঘটিকায় বিবাদীগণ আমার বাড়ির উঠানে এসে আমাকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করতে থাকে৷ আমি বিবাদীগণদেরকে গালিগালাজ করতে নিষেধ করলে মঙ্গল ক্ষিপ্ত হইয়া তার হাতে থাকা বাশের লাঠি দিয়া আমাকে এলোপাথাড়ি ভাবে বাইরাইয়া আমার শরীরের বিভিন্ন স্থানে গুরুতর কাটা ও রক্তাক্ত জখম করে৷ আমার ডাক চিৎকারে আমার মা আগাইয়া আসিলে বিবাদী গণ আমার মাকে এলোপাথাড়ি ভাবে বাইরাইয়া তার শরীরের বিভিন্ন অংশে নীলা-ফুলা জখম করে৷ আমাদের ডাক চিৎকারে আসেপাশের লোকজন এগিয়ে এসে আমাদেরকে বিবাদীদের হাত থেকে রক্ষা করে৷ বিবাদীরা আমাদের হত্যা ও গুমরে হুমকি দিয়ে চলে গেলে স্থানীয়দের সহায়তায় দেলদুয়ার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স হাসপাতালে আসিয়া চিকিৎসা নিই৷ আমি এবং আমার পরিবার নিরাপত্তা হীনতায় আছি৷ এই মর্মে একটি অভিযোগ করে।
বিজ্ঞাপন
আমাদের প্রতিবেদক মর্শেদার সাথে কথা বললে মর্শেদা তার শরীর পোশাকের বাহিরের আঘাতের চিহ্ন দেখায় হাতে পায়ে রক্ত জমাট এবং মাথায় কাটা অংশ দেখায় তিনি জানান কোমরে পিঠে পেটে আরো মারাত্তক আঘাতের চিনহ রয়েছে সেই সাথে এ নৃশংস ঘটনার বিচারের আবেদন জানায়৷
মর্শেদার মা জানান আমি একজন বিধবা নারী আমার বাড়িতে এ-ই প্রতিবন্ধী মেয়ায়েকে নিয়ে থাকি বাড়িতে আমার অভিভাবক বলতে কেহ নাই “বাবা” পাশের বাড়ির আব্দুল জলিল দীর্ঘ দিন আগে আমার স্বামীর নিকট হইতে আমার বাড়ির সিমানায় তার একটু জমি বিক্রি করার উদ্দেশ্য টাকা নেয় কিন্তু জমি রেজিষ্ট্রি নেয়ার আগেই আমার স্বামী মারা যায় এর পর যখনি আমরা জমির কথা বলি তখনি আমাদের মারধর করে এবং প্রতিনিয়ত গালি গালাজ করে আসছিল। আমাদের বাড়িতে আমাদের কোনো পুরুষ মানুষ না থাকায় প্রতিনিয়ত আমাদের উপর নানারকম অত্যাচার করেই আসছে আমাদের কোনো টাকার জোড় বা শক্ত কোনো অভিবাবক না থাকায় আমাদের উপর বিভিন্ন রকম অত্যাচার করেই যাচ্ছে এবং আমরা নিরবে সেটা হজম করছি। আমরা এলাকার প্রতিনিধি ও মান্য গন্য ব্যক্তিদের কাছে বিচার দিয়েও বিচার পাইনি। এলাকার ওয়ার্ড মেম্বর করিম এর শেল্ডারে এরকম ঘটনা ঘটিয়ে আসছে প্রতিনিয়ত।
বিজ্ঞাপন
সর্বশেষ ৬ জুলাই বৃহস্পতিবার আমকে বেধরক মারতে থাকে আমার প্রতিবন্ধী মেয়ে ছাড়াতে গেলে আমাকে ছেড়ে তাকেও লাঠি দিয়ে ৫ জনে মিলে বেধরক পেটায় একপর্যায়ে মঙ্গল ও সোহাগ তাকে ঝাপটে ধরে আমার মেয়ে আত্ম রক্ষায় জীবন বাচাতে কামুড় দিলে তাকে ছেড়ে দিয়ে দুজন পুনরায় লাঠি দিয়ে পেটাতে থাকে পেটানোর এক সময় মোর্শেদার জ্ঞান হারিয়ে গেলে তাকে ছেড়ে দেয়। আশ পাশের লোক এসে আমাদের উদ্ধার করে। আন্য দিকে ওদের দুজন দৌরে গিয়ে ইউপি সদস্য করিম মেম্বার কে ডেকে আনে করিম মেম্বার এসে কাহকে কিছু না বলে উল্টো জিগার ডাল নিয়ে আসে আমাদের মাড়তে। সে সময় অনেক লোকজন থাকায় মেম্বার আমাদের মারতে পাড়েনি আমাদের সামনেই মেম্বার মঙ্গলদের বলে হাসপাতালে যা চিকিৎসা নিয়ে কোর্টে গিয়ে ওদের আগেই একটা মামলা দিবি বাকিটা আমি দেখবনি। আমাদের কোনো সহযোগিতা নাকরে আমাদের রক্তাক্ত অবস্থায় ফেলে মেম্বার চলে যায় এলাকাবাসী আমাদের চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে পাঠায় আমরা সরাসরি থানায় যাই থানার পুলিশ আমাদের হাপাতাল পর্যন্ত এগিয়ে দিয়ে যায়। এর পর থেকে আমরা হাসপাতালেই আছি।
এলাকার মানুষ মেম্বরের ভয়ে আমাদের পক্ষে কথা বলতে পাড়েনা। আমাকে ছুটি দিয়েছে আমি বাড়ি যাইতে সাহস পাচ্ছিনা কারন এই হাসপাতালে এসেও হুমকি দিয়ে গেছে বাড়িগেলে মেড়ে গুম করে ফেলবে পুলিশ ম্যানেজ করবে মেম্বার, আর অভিযোগ দিয়ে কিছুই হবেনা পুলিশ আমাদের পক্ষেই কাজ করবে এলাকার কেহই তোদের পক্ষে কথা বলার সাহস পাবেনা। এধরনের হুমকি তে আমি বাড়ি যেতে সাহস পাচ্ছিনা। আমি নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি। আমি প্রশাসন, এলাকাবাসী, এবং প্রধানমন্ত্রীর কাছে ওদের বিচার চাই, আমার এবং আমার পরিবারের নিরাপত্তা চাই।
বিজ্ঞাপন
এ বিষয় স্থানীয় ইউপি সদস্য আ: করিম মেম্বার জানায় আমাকে মঙ্গল এবং মঙ্গলের বৌ ডেকেছে আমি ঘটনা স্থলে গিয়ে দেখি উভয় পক্ষ আহত মঙ্গলের পিঠে কামুড় এর দাগ তাকে চিকিৎসা নেয়ার পরামর্শ দেই। মোর্শের মাথায় রক্ত্যাক্ত অবস্থ দেখেছি উভয় পক্ষকে ধমক দিয়ে পরিবেশ পরিস্থিতি শান্ত করে চিকিৎসা নিতে পাঠাই৷ তার উপর আনা মোর্শেদা ও বিধবা ফরিদার দেয়া অভিযোগ অস্বীকার করেন। তিনি আরো জানান দেলদুয়ার থানার এ এস আই শাহিন এসেছিলেন তদন্তে, আমি তাকে যানিয়েছি এই ভিষয়টি আমরা সামাজিক ভাবে মীমাংসা করে দেবো৷
প্রতিবেশি কোহিনুর বেগম জানান আমি নলুয়া থেকে এশে দেখি পাথরাইল পূর্বপাড়া দোকানপাড়ে অনেক মানুষ তখন মোর্শেদার দিকে চোক যায় দেখি তার শারা শরীরে রক্ত লোক জন সহযোগিতা করে তাকে অটোতে তুলে দিচ্ছে।
এবিষয়ে এলাকা বাসী কোনো এক অজ্ঞাত কারনে মুখখুলতে রাজি হয়নি।
বিবাদী সোহাগি জানায় ৩০ বছর আগে জমির টাকা নিয়েছিলাম সেটা ফেরত দেয়া হয়েছ মারধরের ঘটনা সত্যি৷ মোর্শেদা আমার বাড়ি এসে বারান্দার খুটি ধরে ঝাকিনি দিতে থাকে, ফলে টিনের চাল নরবরে হয়ে যায় তাই আমরা তাকে মেরেছি৷ বাড়িতে অন্য কাওকে পাওয়া যায়নি।
বিজ্ঞাপন
এ বিষয়ে দেলদুয়ার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোঃ নাসিরুদ্দিন মৃধার সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করলে তিনি জানান বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হচ্ছে৷ তদন্ত সাপেক্ষে আমরা ব্যবস্থা নেব৷