টাঙ্গাইলে মামলা তুলে না নেয়ায় প্রতিপক্ষের হামলায় মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়ে কিছুটা সুস্থ হয়েও ভয়ে বাড়ি ফিরতে পারছেনা হাসমত আলীর পরিবার।
ঘটনাটি ঘটেছে টাঙ্গাইল সদর উপজেলার ছিলিমপুর ইউনিয়নের চরপাকুল্লা গ্রামে। উপজেলার ছিলিমপুর ইউনিয়নের চরপাকুল্লা গ্রামে মোঃ নাগর আলী পাশের বাড়ির শরীকদের হামলার শিকার হয়ে তাদের বিরুদ্ধে একটি মামলা করেন সেই মামলা তুলে না নেয়ায় বিবাদীরা নাগর আলীর ছেলে হাসমত আলীকে পূর্বপরিকল্পিত ভাবে একা পেয়ে সন্ধাবেলায় লোহার রড দিয়ে মেরে মৃত নিশ্চিত ভেবে ধলেশ্বরী নদীতে ফেলে দেয়ার সময় এলাকাবাসী উদ্ধার করে চিকিৎসার জন্য টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতালে পাঠায়।
তার একটি পায়ের হার ভেঙ্গেগিয়েছে মাথায় গুরুতর আঘাত সহ শরীরের বিভিন্ন স্থানে কাটা ফোলা নীলা জখম রয়েছে পা প্লাস্টার করে কয়েক দিন হাসপাতালে চিকিৎসা শেষে ছুটি পেয়েছে। হাসমত আলী এখনও পুরোপুরি অসুস্থ নয়। এমতাবস্থায় হামলা কারীদের হুমকিতে বাড়ি যাইতে সাহস পাচ্ছেনা কারন পুর্বেও বাড়ির সকল সদস্য কে দফায় দফায় মারধর করেছে এলাকার জনপ্রতিনিধিদের কথাও তারা মানেনা। এ বিষয়ে টাঙ্গাইল সদর থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন বর্তমানে হাসমত আলীর পরিবার অন্যের বাড়িতে নিরাপত্তা হিনতায় আতংকে বসবাস করছেন।
বিজ্ঞাপন
এলাকাবাসী এবং হাসমত আলীর পরিবার থেকে ঘটনা বিবরণে জানাজায় গত ১২ ই আগস্ট (রবিবার) সন্ধ্যা ০৭:০০ঘটিকায় আহত হাসমত দোকান থেকে বাড়ি ফেরার পথে পূর্ব শত্রুতার জের ধরে একই গ্রামের ১/মোঃ জিন্নাত আলী জেনু মিয়া(৫০), পিতা মৃত ইন্তাজ আলী ২/আব্দুর রশিদ(৪০),পিতা মৃত ইন্তাজ আলী ৩/ মোঃ রমজান আলী(৬০), পিতা মৃত ইন্তাজ আলী, ৪/আজাহার আলী (৩০) পিতা মোঃ রমজান আলী, ৫/ মোঃ আব্দুল মান্নান (৬৬),পিতা মৃত ইন্তাজ আলী ৬/ মোছাঃ মমতাজ বেগম (৩৪),স্বামী- আঃ রশিদ ৭/ মোছাঃ রুবি বেগম, স্বামী- জিন্নাত আলী জেনু মিয়া ০৮/ মোছাঃ আম্বিয়া বেগম (৫০) স্বামী-রমজান আলী ৯/ রুহুল আমিন (১৯) পিতা- আঃ রশিদ সর্ব সাং চর পাকুল্লা ডাকঘরঃ শাহানশাহগঞ্জ থানাঃ টাংগাইল সদর জেলাঃ টাঙ্গাইল৷ সম্মিলিত হয়ে পূর্বপরিকল্পিত ভাবে লাঠিসোঁটা নিয়ে হাসমতের উপর আক্রমণ চালায়৷ রড়, লাঠির আঘাতে হাসমত জ্ঞানহারিয়ে ফেলে তখন হামলাকারীরা মৃত্যু নিশ্চিত ভেবে ধলেশ্বরী নদীতে ফেলে দেয়ার চেস্টা করে এলাকাবাসী হামলার সময় হাসমতের বাচাও বলে চিৎকার দিয়ে ছিলেন সেই চিৎকারের শুনে আশেপাশের বাড়ির লোকজন আসলে হাসমতকে অর্ধমৃত অবস্থায় নদীর কুলে ফেলে রেখে পালিয়ে যায় হামলাকারীরা এমন অভিযোগ এলাকাবাসী ও হাসমত মিয়ার ৷
বিজ্ঞাপন
হাসমত মিয়া আরো বলেন, “ইতোপূর্বে জমি সংক্রান্ত নিরোধের পুর্বশত্রুতার জেরে হামলাকারিরা আমার পরিবারের সদস্যদের কয়েক দফায় মারধর করেছে৷ তাই আমার বাবা তাদের বিরুদ্ধে ০৬/০৩/২০২৩ইং খ্রি: একটা মামলা দায়ের করে যার মামলা নাম্বার জি/আর ৮৭/২৩ এবং এই মামলায় তাদের আদালত থেকে জেল হাজতে পাঠায় পরবর্তীতে তারা জামিনে মুক্তি পেয়ে আমাদের বিভিন্ন ভাবে হুমকি ধামকি দিলে আমার বাবা পূণরায় ৭ ধারায় মামলা করে এরপর হামলাকারীরা কোর্টে বন সই দেয় যে পরবর্তীতে আমাদের পরিবারের কাউকে আর কখনো হুমকি ধামকি দিবেনা৷ সেখান থেকে আসার পর আমাকে আর আমার পরিবারের সবাইকে মামলা তুলে নেয়ার জন্য পুনরায় হুমকি ধামকি দিতে থাকে এবং আমার বাবা মামলা না তুলে নেয়ায় আমাকে ১২ আগস্ট সন্ধ্যা ০৭:০০ ঘটিকায় পূর্বপরিকল্পিত ভাবে মেরে ফেলার উদ্দেশ্যে অন্ধকারে আমার উপর হামলা চালিয়ে আমার মাথায় সহ আমার হাত ও পায়ে রড ও বাশ দিয়ে আঘাত করে ফলে আমার পা ভেঙ্গে গেছে সর্ব শরীরে আঘাত করছে এবং আমার মাথা ফাটায় আমি অজ্ঞান হয়ে যাই বর্তমানে আমি এবং আমার পরিবার বাড়ি যাইতে সাহস পাচ্ছিনা কারন হামলাকারীরা প্রতিনিয়ত হুমকি দামকি দিয়েই যাচ্ছে আমতা বর্তমানে অন্যের বাড়িতে নিরাপত্তা হিনতায় ভুগছি ৷ এমত আবস্থায় আমি মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ও টাংগাইলের আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কাছে এদের সঠিক বিচার চাই৷ এবং আমি বর্তমানে ওদের ভয়ে আমার বাড়িতে যেতে পারছি না৷ আমি আমার জীবনের নিরাপত্তা চাই পাশাপাশি যেন আমার নীজবাড়িতে পরিবার নিয়ে নিরাপদে থাকতে পারি৷”
বিজ্ঞাপন
এ বিষয়ে গত ১৫ ই আগস্ট (বুধবার) হাসমতের বাবা মোঃ নাগর আলী উপরোক্ত ৯ জনকে আসামি করে টাংগাইল মডেল থানায় একটি অভিযোগ দেয়৷ অভিযোগটিতে তিনি বলেন, “বিবাদীরা আমার ১১ডিসেমল জমিতে জোরপূর্বক দখল করে রেখেছে৷ গত ০২/০৩/২০২৩ ইং তারিখে আমার জমি আমাদের ফিরিয়ে দিত বলায় বিবাদীরা আমাদের বাড়িতে এসে সবাইকে মারধর করে৷ এর জন্য আমি কোন উপায় না পেয়ে ০৬/০৩/২০২৩ ইং তারিখে কোর্টে মামলা করি৷ যাহার নাম্বার জি/আর ৮৭/২৩, এই মামলার জেরে তাদেরকে কোর্ট জেল হাজতে পাঠায় ৷ ১০/১২ দিন পর বিবাদীরা জামিনে জেল থেকে বের হবার পর আমাদেরকে বাড়িতে ঢুকে প্রাণ নাশের হুমকি দেয়৷ এরপর আমি কোন উপায় না পেয়ে আবার কোর্টে ৭ ধারায় মামলা করি৷ এরপর বিবাদীরা কোর্টে বনসই দিয়ে বলে আমরা আর মারামারি করবো না এবং বাদীদের আর কোন বিরক্ত করব না৷ কিন্তু বাদিরা গত ১২/০৮/২০২৩ ইং তারিখ রোজ রবিবার সন্ধ্যা ০৭:০০ ঘটিকায় দোকান থেকে বাড়ি ফেরার পথে আমার ছেলের রাস্তা আটকে বিবাদীরা কোর্টের মামলা তুলে নিতে বলে এবং এ পর্যন্ত বিবাদীদের মামলার পেছনে যত টাকা খরচ হয়েছে সেই টাকা আমার ছেলেকে ফেরত দিতে বলে৷ এতে আমার ছেলে অস্বীকার করলে বিবাদীরা সেখানেই আমার ছেলেকে আলো বাধা এভাবে মারতে থাকে৷ বিবাদী ১)মোঃ জিন্নাত আলী জেনু আমার ছেলেকে হত্যার উদ্দেশ্যে মাথা বরাবর লোহার রড দিয়ে বাড়ি মারে, মাথায় আঘাত পড়ার পর আমার ছেলে বাম হাত দিয়ে মাথা ধরে, তখন বিবাদী ২)মোঃ আব্দুর রশিদ মাথা বরাবর আঘাত করলে সেইটা আমার ছেলের বাম হাতে লেগে হাত ভেঙে যায়, এর পর বিবাদী ৩) রমজান আলী ডান পায়ে বাড়ি মারিলে পায়ের মাংস ফেটে রক্তাক্ত জখম হয়, বিবাদী ৪)আজাহার বাম্ পায়ে বারি মারিলে আমার ছেলের বাম পা ভেঙে যায়, বিবাদী ৫)মোঃ আব্দুল মান্নান ডান পায়ের গিরোর উপর বাড়ি মারিলে গিরোর মাংস ফেটে রক্তাক্ত জমা হয়, তখন আমার ছেলে মাটিতে পড়ে গেলে বিবাদীরা আরো এলো পাথারি ভাবে পেটানোর পর তারা আমার ছেলেকে নদীতে ফেলে দিতে যায়৷ তখন এলাকাবাসী ফয়েজ উদ্দিন ঘটনা দেখে ফেলায় আমার ছেলেকে রাস্তায় ফেলে রেখে বিবাদীরা দৌড়িয়ে পালায়৷ এরপর ফয়েজ উদ্দিন আমার ছেলে কে উদ্ধার করে আরো অজ্ঞাত এলাকাবাসীর মাধ্যমে আমার ছেলেকে টাঙ্গাইল সদর হাসপাতালে পাঠিয়ে দেয়৷ বর্তমানে আমার ছেলে চিকিৎসাধীন অবস্থায় আছে৷ এমতাবস্থায় আমি আমার ছেলের প্রান নাসের ভয়ে অনেক পেরেশানিতে আছি৷৷আমি আইনের আশ্রয় চাই৷ ”
এ বিষয়ে আহত হাসমত আলীকে উদ্ধারকারী ফয়েজ উদ্দিন জানান”আমি গেছি নদীতে মাছ মারার জন্য৷ এর মধ্যে আমার সাথে আমার এক ভাইয়ের দেখা হয় আমি ভাইয়ের সাথে আলাপ করতেছি৷ এই সময় পশ্চিম দিকে ওই টানে বাইরাবারি চিৎকারের শব্দ পাই কিন্তু মানুষের কোন বাস পাই না বাস না পাওয়াতে পাঁচ ছয়টা বাড়ি দেবার পর চিকির দিছে চিকির দেওয়ার পর হয়তো আরো ৫/৬ টা বারি দিছে৷ পরে মনে কইলাম দেখি এমন মারামারিটা করল কেরা৷ তে আমি আবার নৌকা নিয়ে এগিয়ে গেছি৷ এগিয়ে যাওয়ার পর টানে যাদের বাড়ি তারা কইতাছে তাড়াতাড়ি নৌকাটাই এগিয়ে আনো৷ আমি আইগাইয়া গেছি যাইয়া দেখি হাসমত আধমরা অবস্থায় পইড়া রয়েছে৷ পরে সবাই ধরাধরি কইরা আমার নৌকায় উঠাইয়া দিছে আমি এইপার আইনা গাড়ির খবর দিয়ে হাসপাতালে পাঠাইছি৷” বিবাদীদের কাউকে দেখতে পেয়েছে কি না জানতে চাইলে তিনি বলে আমি কাউকে দেখি নাই৷
বিজ্ঞাপন
এ বিষয়ে অভিযুক্ত ১ম বিবাদী মোঃ জিন্নত আলী জেনু মিয়ার সাথে কথা বললে তিনি বলেন, “ঘটনা সত্যি মারামারি হইছে৷ ” মারামারির কারণ জানতে চাইলে তিনি বলেন, ” আমাদের এক শরিকের জমি আমরাও কিনেছি তারাও কিনেছে। মুলত ঐ জমি নিয়াই এই দন্দের সৃষ্টি তারা জমি কিনেছে এক যায়গায় চায় আরেক যায়গায় এ থেকেই প্রতিবার বাকতর্ক থেকে মারামারির সৃষ্টি হয়। বর্তমানে মাড়ার হুমকি এবং বারিতে উঠতে না দেয়ার অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন আমরা কাওকে বাড়িতে থাকতে বাধা দেইনা বরং তারাই বাড়ি আসেনা। তিনি জানান বিষয়টি চেয়ারম্যান মেম্বারকে জানানো হয়েছে আমরা চাই চেয়ারম্যান যেন মারামারির বিষয়টি মিটিয়ে দেয়।
এবিষয় ছিলিমপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান সুজায়েত হোসেন জানান হাসমত আলীকে মারার বিষয়টি আমি জানি হাসপাতালে নেয়ার সময় আমি দেখেছি সে সময় তার চিকিৎসা আগে প্রয়োজন সে জন্য তাকে আগে সুচিকিৎসার জন্য হাসপাতালে পাঠানোর নির্দেশ দেই আগে অসুস্থ হোক। পরবর্তীতে শুনেছি হাসমতের বাবা থানায় একটি অভিযোগ করেছে বিবাদীরা আমাকে বিষয়টি মিটিয়ে দেয়ার জন্য জানায় বাদী পক্ষ আসেনি তারা আইনের আশ্রয় নিয়েছে আমিও আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল পুর্বেও এধরনে ঘটনা ঘটেছে বিবাদিরা কারো সিদ্ধান্ত মানতে চায়না এখন এলাকায় শালিশ করে মিমাংসা করলাম পরবর্তীতে যাদি পুনরায় এই ঘটনা ঘটায় কাজেই বিষয়টি আইনি ভাবে মীমাংসা হওয়াই ভালো।
বিজ্ঞাপন
টাঙ্গাইল সদর থানার অফিসার ইনচার্জ আ: সালাম জানান আমরা প্রথমে অভিযোগ পেয়েছি মামলা টি রেকর্ড হয়েছে মামলা নং – ০৫ তারিখ ০১/০৯/২০২৩ ইং। আমরা যথাযথ আইনি ব্যবস্থা গ্রহন করবো।