টাঙ্গাইলে ওয়ার্ড আওয়ামিলীগের দ্বন্দ্ব এখন প্রকাশ্যে’ সাধারণ সম্পাদককে কুপালো সভাপতির গ্রুপ এমনি অভিযোগ’
আহত সাধারন সম্পাদক ঢাকা মেডিকেলে চিকিৎসাধীন
টাঙ্গাইল পৌরসভার ৩নং ওয়ার্ড আওয়ামিলীগের সভাপতি হুমায়ুন রশীদ আকন্দ সোনা আকন্দ এবং সাধারণ সম্পাদক হেলাল ফকিরের দ্বন্দ্ব বেশ কিছুদিন আগে থেকেই তবে এতদিন স্নায়ুযুদ্ধ সহ ছোখাট ঘটনা এদের দুই গ্রুপের মধ্যেই রয়েছে কিন্তু সেই দ্বন্দ্ব প্রকাশ পায়নি মঙ্গলবার এক কুপাকুপির ঘটনায় বিষয়টি প্রকাশ পেয়েছে।
বিজ্ঞাপন
পৌর ৩ নং ওয়ার্ড আওয়ামিলীগ এর সভাপতি হুমায়ুন রশিদ সোনার বিরুদ্ধে আওয়ামিলীগের সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক কাউন্সিলর হেলাল ফকিরকে মেরে ফেলার উদ্দেশ্য হেলাল ফকির সহ তার ছেলে ও ভাতিজাদের কুপিয়ে গুরুতর আহত করার অভিযোগ উঠেছে ৷
বিজ্ঞাপন
মঙ্গলবার (৩১শে অক্টোবর) দুপুর আনুমানিক ১:৩০ মিনিটে হেলাল ফকির ও তার সমর্থকেরা মোটরসাইকেল যোগে টাঙ্গাইল জেলা আওয়ামিলীগের সভাপতি ও টাংগাইল জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা ফজলুর রহমান খান ফারুখ এর সাথে দেখা করতে যাওয়ার পথে দেশীয় অস্র নিয়ে হুমায়ুন রশীদ আকন্দ সোনা ও তার সমর্থকেরা টাঙ্গাইল সাবরেজিস্টার অফিসের দক্ষিন পাশে জেলা পরিষদ রাস্তায় অতর্কিত হামলা চালায়৷ এ সময় হেলাল ফকির সহ তার ছেলে ইব্রাহিম ফকির (২৪) ও তার ভাতিজা আজিজ ফকির(২৮) গুরুতর আহত হয়৷ এ ঘটনায় হেলাল ফকির আত্মরক্ষায় হাত দিয়ে কোপ ফেরাতে গেলে তার ডান হাতে কোপ লাগে এছাড়া তার ছেলে ইব্রাহিম ফকিরের মাথায় ও তার ভাতিজা আজিজ ফকিরের মাথায় কোপ লাগে৷ পরবর্তীতে আশপাশের লোকজন এগিয়ে আসলে দূর্বৃত্তরা পালিয়ে যায় এবং আহতদের টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য নেয়া হয়৷ এ সময় হেলাল ফকিরকে দেখতে টাঙ্গাইল সদর -০৫ আসনের সংসদ সদস্য আলহাজ্ব ছানোয়ার হোসেন, টাঙ্গাইল পৌরসভার মেয়র এস এম সিরাজুল হক আলমগীর, টাঙ্গাইল শহর আওয়ামিলীগের সাধারণ সম্পাদক এম এ রৌফ, টাঙ্গাইল সদর উপজেলা আওয়ামিলীগের সভাপতি ফারুখ হোসেন মানিক, সদর উপজেলা আওয়ামিলীগের সাধারণ সম্পাদক তোফাজ্জল হোসেন খান তোফা সহ বিভিন্ন পর্যায়ের নেতৃবৃন্দ দেখতে আসেন৷ এদিকে আহত হেলাল ফকিরের অবস্থ আশংকাজনক হোয়ায় তাকে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকা ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়।
বিজ্ঞাপন
জানাযায় হেলাল ফকিরের মাধ্যেমেই প্রথমত ওয়ার্ড আওয়ামিলী সক্রিয় হয় এবং হুমায়ুন রশিদ সোনার দলীয় পদপদবী জন্য হেলাল ফকির সার্বিক সহযোগিতা ও সর্বউচ্চ সুপারিশ করেছেন নিজের অবস্থান আধিপত্য শক্তি রৃদ্ধির জন্যে,এক সময় দুজনে মিলে এক চাটিয়া ব্যাবসা বানিজ্য এলাকায় বিচার শালিশ সহ আধিপত্য বিস্তার করে আসছিল এর মধ্য গত পৌর নির্বাচনে প্রথমত হেলাল ফকির কে সমর্থন না করে নিজেই প্রার্থী হোয়ার ঘোশনা দিলে দুজনের মধ্য দ্বন্দ শুরু হয় যদিও হুমায়ুন রশিদ সোনা পর্বর্তীতে নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ায় কিন্তু নিজেদের মধ্যে অন্ত দন্দ থেকেই যায় সেই দ্বন্দ এক সময় ব্যবসা বানিজ্য পার্টনারশিপ সেখানেও চলে আসে যে টা দীর্ঘ দিন ধরে পুশেে রাখেন নিজেদের মধ্য সেই ধারাবাহিকতায় আজকের ঘটনা বলে মনে করছে এই এলাকার সাধারন মানুষ।
বিজ্ঞাপন
হামলার বিষয়ে হেলাল ফকির বলেন, “আজকে মিছিল ছিল মিছিল থেকে আসার পথে এসপি অফিসের সামনে যে আমতলা সেখানে আসার পরে আমার সাথে যারা মিছিলে গিয়েছিল পোলাপান দের সোনা হুন্ডা থেকে নামিয়ে এক দফা মারছে মারার পরে মেয়ের সাহেব বলছে এমপি সাহেব বলছে রৌফ ভাই বলছে যে আপনে শান্ত থাকেন আমরা দেখতাছি ফারুখ সাহেব ফোন দিয়ে বলছে যে তুমি শান্ত থাকো এটা দেখতেছি আমি শান্ত ভাবেই আমি আমার চেম্বারে বসে আছি এর মধ্যে আমার আরেক নেতা স্মৃতি সাহেব আমি উনারে বললাম যে লিডার এই ভাবে মারলো আবার ফারুখ সাহেবের কাছে গিয়া বিচার দিছে৷ উনি বললো যে, লিডার এখোনো আছে তুমি যাও তুমি কথা গুলা বইলা আসো৷ আমি চেম্বার থেকে বের হয়ে রাস্তায় যাওয়ার সাথে সাথেই সোনার নেতৃত্বে ২০-৩০ জন পোলাপান একদম দাও টাও নিয়া আইয়া সোনা প্রথমে আমাকে কোপ দিলো তার পর ৩-৪ জনে কোপানো শুরু করলো৷ আমারে আমার ছেলে আমার ভাতিজা আরো যারা আমার সাথে ছিলো হুন্ডা ভাংছে ৩টা৷ এই হুমায়ুন রশিদ সোনা বিএনপিতে ছিলো জাতীয়পার্টিতে ছিলো আওয়ামিলীগ এ আইসা পরিকল্পিত ভাবে ৩ নং ওয়ার্ড আওয়ামিলীগকে ধ্বংস করার জন্য আমার প্রতি সে দীর্ঘদিন যাবত আমারে মাইরা ফালানোর জন্য বিভিন্ন ভাবে সর্বহারাদের সাথেও মিটিং করছে বইসা আমাকে মাইরা ফালাবো৷ আজকেও আমারে মাইরা ফেলার উদ্দেশ্যে আমার মাথায় কোপ দেয় যা আমি হাত দিয়া ফিরাই৷”
এ বিষয়ে হেলাল ফকিরের ছেলে ইব্রাহিম ফকির জানান “আমি আমার বাবার সাথে জেলাপরিষদে যাচ্ছিলাম এমন সময় সাবরেজিস্টার অফিসের দক্ষিন পাশে সোনা ও তার দলবল আমাদের উপর দেশীয় অস্র দা,রড পিস্তল নিয়ে হামলা চালায় এবং আমাদের এলোপাথাড়ি কোপাতে থাকে৷ আমরা এ সহিংসতার বিচার চাই৷”
এ বিষয়ে আজিজ ফকির জানায় আমরা কাকার সাথে টাঙ্গাইল জেলা আওয়ামিলীগের সভাপতি ফজলুর রহমান খান ফারুখ নেতার সাথে দেখা করার জন্য জেলা পরিষদে যাওয়ার পথে সোনা তার দলবল নিয়ে আমাদের উপর হামলা চালায়৷”
এ বিষয়ে ৩নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর সাইফুল ইসলাম সরকার মুঠোফোনে আমাদের জানায় ” আমি ঘটনা শুনতে পেরে হাসপাতালে হেলাল ফকিরকে দেখতে গিয়েছিলাম৷ ওখানে গিয়ে জানতে পারলাম আভ্যন্তরীণ সামান্য একটা ঘটনাকে কেন্দ্র করে এ ঘটনা ঘটেছে৷ ঘটনাটি খুবই দুঃখ জনক৷ ”
এ ঘটনার সংবাদ পেয়ে টাঙ্গাইল সদর-০৫ আসনের সংসদ সদস্য আলহাজ্ব ছানোয়ার হোসেন এমপি হেলাল ফকিরকে হাসপাতালে দেখতে এসে সাংবাদিকদের জানায় “এটা আমাদের অভ্যন্তরীণ কোন্দল বলেন আর যেটাই বলেন আমরা আসলে এ বিষয়টি কঠিন ভাবে দেখছি৷ আর এখন এখানে যে বিষয়টি উপস্থাপিত হয়েছে আমরা এটাও কঠিন ভাবে দেখছি৷ যাতে করে ভবিষ্যতে এ ধরনের ঘটনা আর না ঘটে আর যারা এই ঘটনার সাথে জড়িত আমরা তাদের আইনের আওতায় এনে তাদের বিচার করব ইনশাল্লাহ৷”
এবিষয়ে ৩নং ওয়ার্ড আওয়ামিলীগের সভাপতি হুমায়ুন রশিদ আকন্দ সোনা মুঠোফোনে জানান,” আজ আমি প্রায় ৫০-৬০টি মোটরসাইকেল নিয়ে বিএনপির ডাকা অবৈধ অবরোধের বিরুদ্ধে মিছিলে যোগদেই৷ মিছিল চলাকালীন সময়ে হেলাল ফকিরের এক সমর্থক নোমান নামের একছেলে আমাকে আহত করার উদ্দেশ্যে আমার মোটরসাইকেলে তার মোটরসাইকেল ধাক্কা লাগায় এবং আমি পরেযাই৷ এটা আমার সাথে থাকা আমার সমর্থকেরা দেখতে পেয়ে ছেলেটিকে মারধর করে যা আমাদের টাঙ্গাইল শহর আওয়ামিলীগের সভাপতি ও টাংগাইল পৌরসভার মেয়র এস এম সিরাজুল হক আলমগীর নিজে থেকে দুই পক্ষকেই শান্ত করে পাঠিয়ে দেন৷
পরে আমি আমাদের অভিভাবক জেলা আওয়ামিলীগের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা ফজলুর রহমান খান ফারুখের সাথে সাক্ষাৎ করে আমি আমার বাসায় চলে আসি৷ আমি ঘটনা স্থলে ছিলাম না৷ পরে জানতে পারি আমার এক সমর্থক আব্দুল্লাহ তার বন্ধুদের সাথে ডিস্ট্রিক্ট কোর্ট এরিয়ায় যাওয়ার পথে হেলাল ফকির ও তার ছেলে সহ তার সমর্থকেরা আব্দুল্লাহ কে মারধর করতে থাকে এমতাবস্থায় তারা আত্মরক্ষার্থে পাল্টা আঘাত করে৷ পরবর্তীতে হেলাল ফকিরের বাহিনী আমার সমর্থকদের ঘর বাড়ি ও দোকান ভাংচুর করে৷
টাঙ্গাইল মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আঃ সালাম মুঠোফোন জানান “এ ঘটনার সংবাদ পেয়ে আমরা তাৎক্ষণিক ভাবে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করি এবং আহতদের হাসপাতালে দেখতে যাই৷ এখন পর্যন্ত আমরা কোনো লিখিত অভিযোগ পাইনি তবে অভিযোগ পেলে আমরা মামলা নেব৷ আইন শৃঙ্খলা রক্ষায় আমরা সব সময় তৎপর৷”
বিজ্ঞাপন
এদিকে এই হামলার সংবাদ চারদিকে ছড়িয়ে পরলে হেলাল ফকিরের সমর্থকরা ওয়ার্ডের হাউজিং এস্টেট এর বস্তিতে ডুকে এই ঘটনার সাথে জড়িত সন্দহে সভাপতির সমর্থক জিয়া ও হাবিবের বাড়ি ভাংচুর করে। পরপর পাল্টাপাল্টি ঘটনায় এলাকায় ব্যপক চাঞ্চল্য সৃষ্টি হয়েছে পুরো এলাকা জুড়ে থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে যেকোনো সময় যে কোনো ঘটনার আশংকা করছে এলাকাবাসী।