টাঙ্গাইল ঘাটাইল পৌরসভার আইন মানেনা অনেকেই নোটিশের ৭ মাস পর বন্ধ হলো ভবন নির্মাণের কাজ
টাঙ্গাইল ঘাটাইলে পৌরসভার আইন মানেনা অনেকেই এমনি এক ভবন মালিক অনুমোদিত নক্সা বহির্ভুত কাজ বন্ধ এবং নির্মিত অবৈধ অংশ ভেঙ্গে অপসারণের জন্য পৌরসভার পাঠানো নোটিশ হাতে পেয়ে নোটিশ কে তোয়াক্কা না করে নিজের ইচ্ছামত তার ভবনের কাজ চালিয়ে যায়।অবশেষে সাত পর বন্ধ হয়েছে ভবন নির্মাণের কাজ।
বিজ্ঞাপন
এমনটাই ঘটেছে টাঙ্গাইলের ঘাটাইল পৌরসভার ১ নং ওয়ার্ডের জয়নাবাড়ী এলাকায়। ভবন মালিক কথা শুনছেন না পৌর কর্তৃপক্ষ এমন অভিযোগ তোলায় উপজেলা নির্মাণ প্রকৌশল শ্রমিক ইউনিয়ন কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপে কাজটি বন্ধ করা হয়েছে। প্রতিবেশী জহুরুল হক সিদ্দিকীর অনুমোদিত নক্সা বহির্ভুত কাজ করার অভিযোগে মো. হাবিবুর রহমানের তিনতলা ভবন নির্মাণে কাজটি বন্ধ করা হয়।
বিজ্ঞাপন
জানা যায়, ১ নং ওয়ার্ডের জয়নাবাড়ী এলাকায় নবনির্মিত তিনতলা ভবনের মালিক মো. হাবিবুর রহমান অনুমোদিত নক্সা বহির্ভুতভাবে নির্মাণ কাজ করছেন এমন অভিযোগ এনে চলতি বছরের ১০ এপ্রিল ঘাটাইল পৌরসভায় নির্মিত অবৈধ অংশ ভেঙ্গে ফেরার আবেদন করেন প্রতিবেশী জহুরুল হক সিদ্দিকী। পৌর কর্তৃপক্ষ ওই অভিযোগের ভিত্তিতে সাত কার্যদিবসের মধ্যে নির্মিত অবৈধ অংশ ভেঙ্গে ফেলার জন্য নোটিশও পাঠানো হয়। এরপরও ভবন নির্মাণের কাজ বন্ধ না হওয়ায় ২৩ নভেম্বর পুনরায় আবেদন করেন ভুক্তভোগি ওই প্রতিবেশী।
সরেজমিনে অভিযোগের সত্যতা পাওয়া গেছে। ভবন মালিক মো. হাবিবুর রহমান অনুমোদিত নক্সা বহির্ভুতভাবে নির্মাণ কাজ অব্যাহত রেখেছেন। বহুতল ভবন নির্মাণের নির্দেশনা চরম ভাবে অমান্য হচ্ছে সেই ভবনে।
বিজ্ঞাপন
পৌরসভার ইমারত আইনে চারপাশে কমপক্ষে তিন ফুট ছেড়ে ভবন নির্মাণের নির্দেশনা থাকলেও ওই ভবনের আশপাশে ছাড়া হয়নি কোন জায়গা।
ভুক্তভোগি জহুরুল হক সিদ্দিকীর অভিযোগ, আমার ভবন নির্মাণের সময় ছেড়ে রাখা পেছনের অংশের তিন ফুট জায়গা দখল করে ও অনুমোদিত নক্সা বহির্ভুতভাবে ভবন নির্মাণ করছেন মো. হাবিবুর রহমান। পৌরসভার ইমারত আইন অমান্য করে ওই ভবন নির্মাণ করার ফলে আশপাশের প্রতিবেশীরা ভবিষ্যতে চরম সমস্যার সম্মুখীন হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। এ কারণে পৌর কর্তৃপক্ষের কাছে অনুমোদিত নক্সা বহির্ভুত নির্মিত ওই ভবনের কাজ বন্ধের জন্য আবেদন করা হয়েছে। পৌর কর্তৃপক্ষ নোটিশ দেয়া সত্তে¡ও নির্মাণ কাজ বন্ধ না করে ভবন মালিক আমার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হয়ে উঠেছেন। যার ফলে গত ২৩ নভেম্বর আবার ভবন নির্মাণের কাজ বন্ধের আবেদন করা হয়েছে। পৌর কর্তৃপক্ষের নোটিশে ভবন মালিক কাজ বন্ধ না করলেও নির্মাণ প্রকৌশল শ্রমিক ইউনিয়ন কর্তৃপক্ষের নির্দেশে ওই ভবন কাজ করা বন্ধ রেখেছেন শ্রমিকরা। এখন আমি পৌর কর্তৃপক্ষের কাছে এ সমস্যার স্থায়ি সমাধান চাচ্ছি।
ভবন মালিক মো. হাবিবুর রহমান বলেন, অনুমোদিত নক্সা অনুযায়ি ভবনের কাজ করা হচ্ছে। মেয়র, ওয়ার্ড কাউন্সিলরসহ পৌর কর্তৃপক্ষ চলমান কাজ দেখে গেছেন।
বিজ্ঞাপন
ঘাটাইল উপজেলা নির্মাণ প্রকৌশল শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি মো. খলিলুর রহমান খোকা বলেন, অনুমোদিত নক্সা বহির্ভুত কাজ বন্ধের জন্য পৌরসভার একটি নোটিশ আমরা পেয়েছি। আমাদের সংগঠণের নিয়ম অনুযায়ি ও নোটিশ পাওয়া মাত্রই ওই ভবন নির্মাণের কাজে নিয়োজিত আমাদের শ্রমিকদের কাজ বন্ধ রাখার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। গত ২৭ নভেম্বর কাজটি বন্ধ করা হয়েছে।
বিজ্ঞাপন
১ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর বিসা মিয়া বলেন, সমস্যা সমাধানে উভয় মালিককে জমি পরিমাপের জন্য বলা হয়েছে।
এ বিষয়ে ঘাটাইল পৌরসভার মেয়র বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. আব্দুর রশিদ মিয়া জানান, অভিযোগের ভিত্তিতে নোটিশ দেয়াসহ একাধিকবার উভয় পক্ষকে নিয়ে বসা হয়েছে। ভবন মালিক কথা শুনছেন না, নোটিশের জবাব না দিয়েই কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন।
বিজ্ঞাপন
পৌর এলাকায় এ ধরণের সমস্যা দীর্ঘদিনের হওয়ায় পৌর কর্তৃপক্ষও কঠোর আইনগত ব্যবস্থা নিতে পারছেনা। কঠোর হলেই পৌর কর্তৃপক্ষকে জড়িয়ে চলছে নানা ধরণের আলোচনা সমালোচনা। এ কারণে সমস্যাগুলো নিরসন সম্ভব হচ্ছেনা। এরপরও সমস্যা সমাধানে পৌরবাসিকে সম্পৃক্ত করার চেষ্টা চলছে।