টাঙ্গাইলে লাগামহীন ভাবে বাড়ছে নিত্য-প্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের দাম, ব্যবসায়ীরা বলছেন কয়েক দিনের বিষ্টিতে ক্ষেতের ব্যাপক ক্ষতি হওয়ায় সব্জীর দাম বেড়েছে।
নাগরপুর থেকে শিপন রানা: টাঙ্গাইল সদর সহ প্রতিটি উপজেলার বাজার গুলোতে অনিয়ন্ত্রিত ভাবে বাড়ছে নিত্য-প্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের দাম, ব্যবসায়ীরা বলছেন কয়েক দিনের বিষ্টিতে ক্ষেতের ব্যাপক ক্ষতি হওয়ায় সব্জীর দাম বেড়েছে। এর মধ্য নাগরপুর উপজেলা বাজার গুলোতে লাগামহীন হয়ে পড়েছে নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যের দাম।
বিজ্ঞাপন
বর্তমানে দেশের অন্যতম আলোচ্য বিষয় নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের লাগামহীন মূল্যবৃদ্ধি। কালোবাজারী, মুনাফাখোর, মজুতদার প্রভৃতির কারণে খাদ্যদ্রব্য, চাল, ডাল, তেল, লবণ, মরিচ, চিনি, দুধ থেকে শুরু করে নিত্যপ্রয়োজনীয় ও অপরিহার্য দ্রব্যগুলোর মূল্য বৃদ্ধি পাচ্ছে প্রতিদিন এবং ক্রমে এসব পণ্য সংগ্রহ কঠিনতর হচ্ছে দরিদ্র ও মধ্যবিত্ত মানুষগুলোর জন্য। প্রতিটি পণ্যের দাম এখন ঊর্ধ্বমুখী। কোনভাবেই কমছে না এসব দ্রব্যের মূল্য। সাধারণ মানুষের ক্রয় ক্ষমতার বাইরে চলে যাচ্ছে প্রতিটি পণ্যের দাম। নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যাদি সহ সবজির বাজারে অস্বাভাবিক হারে বাড়ছে জিনিসপত্রের দাম। ব্যবসায়ীরা বলছেন, গত কয়েক দিনের বৃষ্টিতে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে সবজি ক্ষেতের ব্যাপক ক্ষতি হয়। এতে দ্রুত বেড়ে যায় সবজির দাম। এছাড়াও সংকটের কারণেও জিনিসপত্রের দাম কিছুটা বৃদ্ধি।
বিজ্ঞাপন
বুধবার (২অক্টোবর) নাগরপুর উপজেলা সদর অন্যতম বৃহৎ বাজার (সাপ্তাহিক) বুধবার হাট নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের বাজার ঘুরে দেখা গেছে, প্রতিটি নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যের বাজারের দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি। কোনভাবেই কমছে না প্রয়োজনীয় দ্রব্যের দাম। এতে দিশেহারা হয়ে পড়ছেন খেটে খাওয়া মানুষেরা। বাজার করতে গিয়ে চরম বেকায়দায় পড়ছেন দিনমজুর খেটে খাওয়া নিম্ন আয়ের মানুষ।
বিজ্ঞাপন
নাগরপুর সদর কাঁচাবাজার ঘুরে দেখা গেছে,প্রতি কেজি কাঁচামরিচ ২৪০ টাকা, পিঁয়াজ বর্তমানে ১১০ টাকা, রসুন ২৪০ টাকা , আদা ২০০ টাকা,শুকনো মরিচ ৪০০ টাকা,পটল ৫০-৬০ টাকা , বেগুন ৭০-৮০ টাকা , করলা ৮০-১০০ টাকা , শসা ৫০-৬০ টাকা , বরবটি ৮০ টাকা , গাজর ১৮০-২০০ টাকা , টমেটো ১৬০-১৮০ টাকা, কচুর লতি ৬০-৮০ টাকা , আলু ৫০-৬০ টাকা , ঝিংগা ৭০-৮০ টাকা ,ঢেরস ৮০ টাকা , লেবুর কেজি ৫০-৬০ টাকা এছাড়াও ফল এবং শাক-সবজিও বেশি দামে বিক্রি হয়েছে। গরিবের আমিষের চাহিদা পূরণ করতে যে ডিম ও পাঙ্গাস মাছের ভুমিকা অপরিসীম, তার দামও এখন নাগালের বাইরে। গত কয়েক মাস আগে ৩৫-৪০ টাকা হালি ডিম ও ১২০-১৩০ টাকা কেজিতে পাঙ্গাস মাছ গেলেও এখন বিক্রি হচ্ছে (ডিম হালি) ৬০ টাকা ও (পাঙ্গাস মাছ) কেজি ১৬০-১৮০ টাকা। ব্রয়লার মুরগির দামও ক্রয় ক্ষমতার উর্ধ্বে। কেজি প্রতি পোল্ট্রি ব্রয়লার বিক্রি হচ্ছে ১৮০-২০০ টাকায়।
বিজ্ঞাপন
এদিকে চাল, ডাল, তেল ও চিনিসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের দাম ক্রয় ক্ষমতার উর্ধ্বে। সব মিলিয়ে ক্রয় ক্ষমতার মধ্যে নেই বাজার ব্যবস্থা।
বিজ্ঞাপন
বাজার করতে আসা হাফিজুল ইসলাম জানান, কাঁচাবাজার সহ সব জিনিসপত্রের দাম যেভাবে বাড়ছে এতে করে আমাদের মতো অল্প আয়ের লোকদের খুবই সমস্যা হচ্ছে। আমরা সাধারণ মানুষ বাজার করতে গিয়ে অল্প কিছু কিনেই বাড়ি ফিরতে হচ্ছে। এতে করে সংসার চালাতে চরম বেগ পেতে হচ্ছে। এ অবস্থা চলতে থাকলে সাধারণ মানুষ অতিমাত্রায় ঋণগ্রস্ত হয়ে পড়বে।
তবে ব্যবসায়ীরা বলছেন, উচ্চমূল্যে তারা কিনছেন তাই তাদের বেশি দামে বিক্রি করতে হচ্ছে। তীব্র দাবদাহ আর বৃষ্টিতে সবজির গাছ পচে নষ্ট হয়ে গেছে। তাই পাইকারী বাজারে দাম বৃদ্ধি হওয়ায় খুচরা বাজারেও বেশী দামে বিক্রি করতে হচ্ছে বলে তারা মনে করেন।এ বিষয়ে কথা হয় চৌহালি এস বিএম কলেজের সরকারি অধ্যক্ষ আলাউদ্দিন হোসেন এর সাথে। তিনি গণমাধ্যমকে- বলেন, দ্রব্যমূল্যের সঙ্গে জীবনযাত্রার সম্পর্ক ওতোপ্রোতভাবে জড়িত। একটি পরিবার কীভাবে তাদের দৈনন্দিন জীবনকে নির্বাহ করবে তা নির্ভর করে তাদের আয়, চাহিদা এবং দ্রব্যমূল্যের ওপর। প্রয়োজনীয় প্রতিটি পণ্যের মূল্য যখন সহণীয় পর্যায়ে এবং সাধারণ মানুষের ক্রয়ক্ষমতার মধ্যে থাকে তখন তাদের জীবন কাটে স্বস্তিতে।
অন্যদিকে জেলারা প্রতিটি বাজারের চিত্র একই সব বাজারেই নিত্যপ্রয়োজনীয় পন্যের মুল্য লাগামহীন ভাবে বেড়েই চলছে।
নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের মূল্য যখন সাধারণ মানুষের আর্থিক সংগতির সঙ্গে অসামঞ্জস্যপূর্ণ হয়ে যায় তখন দরিদ্র এবং অতিদরিদ্র পরিবারে চলে অর্ধাহার, অনাহার এবং পারিবারিক অশান্তি। তাই দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির কারণে একদিকে জনজীবনে নেমে আসে কষ্টের কালো ছায়া। অন্যদিকে মুনাফাখোরী, কালোবাজারীদের কারণে দেশে বিরাজ করে বিশৃঙ্খল পরিস্থিতি। দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধির বর্তমান এ যুগে ন্যায়সঙ্গত মূল্যে কোনো পণ্যই আর পাওয়া যায় না। প্রতিটি পণ্যেই যেন অধিক মূল্যের আগুন জ্বলছে দাউ দাউ করে। অথচ এক বা দুই দশক আগেও এই অবস্থা ছিলো না। বর্তমান সরকার জনবান্ধব সরকার। আশা করছি সরকার সাধারণ মানুষের কথা চিন্তা করে তাদের প্রতিনিধির মাধ্যমে ভোরে পাইকারি বাজার পর্যবেক্ষণ করে খুচরা মুল্য ধার্য করে দ্রব্যমুল্য নিয়ন্ত্রণে আনতে সক্ষম হবে।