টাঙ্গাইল মুনিয়া (৩১) হত্যা মামলার রহস্য উদঘাটন সহ আসামি মুনিয়ার স্বামীকে গ্রেফতার করেছে জেলা পুলিশ।
বিগত ১৫ সেপ্টেম্বর ২০২৩ খ্রিঃ সকাল অনুমান ৮:০০ ঘটিকার সময় টাঙ্গাইল জেলার ভূঞাপুর থানাধীন ঘাটান্দি সাকিনস্থ জনৈক জহুরুল ইসলাম এর ভাড়া দেওয়া বাসায় ভিকটিম মোছাঃ জান্নাতুল ফেরদৌস মুনিয়া (৩১) কে হত্যা করে লাশ গুম করার জন্য তার নিজ বাসার বক্স খাটের নিচে লাশ লুকিয়ে রেখে পালিয়ে যায়। এই সংক্রান্তে ভূঞাপুর থানার মামলা নং-১১, তারিখ-১৫-০৯-২০২৩ খ্রি. ধারা- ৩০২/২০১ পেনাল কোড রুজু হয়।
বিজ্ঞাপন
উক্ত মামলার ঘটনাটি লোমহর্ষক এবং চাঞ্চল্যকর হওয়ায় টাঙ্গাইল জেলার পুলিশ সুপার এর নির্দেশনায় অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম অ্যান্ড অপস্), টাঙ্গাইল এর সার্বিক তত্ত্বাবধানে দ্রুত মামলার রহস্য উদঘাটন ও আসামী গ্রেফতার করার জন্য ভূঞাপুর থানার অফিসার ইনচার্জ মোঃ আহসান উল্লাহ এর নেতৃত্বে থানা পুলিশের একটি চৌকস পুলিশ টিম নিরন্তর প্রচেষ্টা চালিয়ে গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে ঘটনার রহস্য উদঘাটন করে। উক্ত মামলার ঘটনার সাথে জড়িত ব্যক্তির অবস্থান সনাক্ত পূর্বক অভিযান পরিচালনা করে ধৃত আসামী (ভিকটিম এর স্বামী) ০১। মোঃ মুস্তাক (৪৮) কে অত্র জেলার ভূঞাপুর থানাধীন রেল স্টেশন এলাকা হইতে অদ্য ১৯সেপ্টেম্বর ২০২৩ খ্রি. ভোর ০৫:০০ ঘটিকার সময় গ্রেফতার করা হয়।
আসামী মোঃ মুস্তাক কেলার গোপালপুর থানাধীন বাগুয়াটা গ্রামের মৃত হাজী আজমত আলীর ছেলে সে দীর্ঘ দিন প্রবাসে চিলেন।
বিজ্ঞাপন
শুক্রবার (১৫ সেপ্টেম্বর) রাত ৯টার দিকে ভূঞাপুর পৌর শহরের ঘাটান্দি গ্রামের গণেশ মোড় নামক এলাকায় জহুরুল ইসলামের পাঁচ তলার বাসার তিন তলায় একটি ভাড়া বাসার বক্সখাটের নিচথেকে থেকে তার মরদেহ উদ্ধার করে ভুয়াপুর থানা পুলিশ।
বিজ্ঞাপন
ঘটনার বিবরণে জানাজায় মুনিয়া পাশ্ববর্তী গোপালপুর উপজেলার নলিন বাজারের নুরল ইসলামের মেয়ে এবং তার স্বামী মোস্তাক আহমেদ একই উপজেলার বাগুয়াটা গ্রামের আজমত আলীর ছেলে। তাদের দাম্পত্য জীবনে আল মাসুদ (১০) এবং নবীন (৪) বছরের দুইটি ছেলে সন্তান রয়েছে। তারা গণেশ মোড় এলাকায় ভাড়া বাসায় বসবাস করতো। পরিবার ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, মোস্তাক আহমেদ ২০২২ সালের ডিসেম্বর মাসে প্রবাস থেকে একেবারে দেশে ফিরেন। তারপর থেকেই বিভিন্ন সময়ে তাদের মধ্যে পারিবারিক কলহ হতো। ঘটনার দিন দুই ছেলের একজন তার খালার বাসায় ছিল।
গত ১৪ সেপ্টেম্বর বৃহস্পতিবার রাতে এক রুমে ছেলেকে ঘুমিয়ে রেখে অন্য রুমে স্ত্রীকে নিয়ে ঘুমাতে যায় মোস্তাক শুক্রবার ভোরে বাসার মুল দরজায় তালা ঝুলিয়ে দিয়ে পালিয়েছে মোস্তাক। সকালে ছেলেটা ঘুম থেকে উঠে ডাকচিৎকার করলেও আশপাশের কেউ কোন ভাড়াটিয়ারা বিষয় টি বুঝতে পারেনি কেহ বা ইচ্ছে করেই সারা দেয়নি । পরে বাসার কেয়ারটেকার বাসার দরজা খুলে দেয়।এদিকে,বাসার দরজা খোলারপর কেয়ার টেকার সহ আশপাশের কতিপয় ব্যাক্তি ও স্বজনরা মুনিয়া ইসলামের খোঁজ না পেয়ে বাসার বিভিন্ন রুমে খোঁজাখুঁজি করতে থাকে। একপর্যায়ে ছোট ছেলের বক্সখাটের নিচে দেখতে বলে। পরে বক্সখাটের পাতাটন খুলে মুনিয়ার মরদেহ দেখতে পায়। স্বজনদের ধারণা, মোস্তাক তার স্ত্রী মুনিয়া ইসলামকে গলা টিপে বা শ্বাসরোধ করে হত্যা করেছে।
বিজ্ঞাপন
মুনিয়া ইসলামের ভাই আমিনুল ইসলাম জানান, বিভিন্ন বিষয় নিয়ে পারিবারিক ঝামেলা চলছিল স্বামী ও স্ত্রীর মধ্যে। পরে বড় বোন নাসরিন আক্তার কয়েকদিন আগে দুইজনকে বুঝিয়ে মিমাংসা করে দিয়েছিল। এরপর আর কিছু জানি না। সন্ধ্যায় খবর পেলাম বোনের মরদেহ বাসার বক্সখাটের নিচে রেখে দেওয়া হয়েছে। ওর স্বামী মোস্তাক পালিয়েছে। বোনকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে মরদেহ বক্সখাটের নিচে রেখে পালিয়েছে ঘাতক মোস্তাক। তাকে গ্রেফতার করে আইনের আওতায় আনলেই সব রহস্য উদঘাটন হবে আমি তার শাস্তি চাই।
বিজ্ঞাপন
ঘটনার ৪ দিনের মধ্য এই চাঞ্চল্যকর বহুল আলোচিত মুনিয়া হত্যা মামলার প্রধান আসামী গ্রেফতারসহ হত্যার রহস্য উদঘাটন করেছে পুলিশ।
ধৃত আসামীকে প্রাথমিকভাবে জিজ্ঞাসাবাদে নিজ স্ত্রীকে হত্যার সাথে জড়িত থাকার বিষয়ে নিজের দোষ স্বীকার করে। উপরোক্ত আসামীকে বিচারর্থে বিজ্ঞ আদালতে প্রেরণ করার সকল কার্যক্রম প্রক্রিয়াধীন।