কোটি কোটি ভক্তদের উল্লাসে মাতিয়ে ক্রোসিয়াকে ৩ গোলে হারিয়ে বিশ্বকাপ ফাইনালে মেসির দল।
মেসির আর্জেন্টিনা ক্রোয়েশিয়াকে ৩ – ০ গোলে উড়িয়ে কোটি কোটি ভক্তদের উল্লাসে মাতিয়ে বিশ্বকাপ ট্রফি জয়ের টার্গেটে মেসির দল। গতবারের সেমিফাইনালিস্ট শক্তিশালী ক্রোয়েশিয়াকে রুখেদিয়ে মেসি এবং আলভারেজ এর কারিসমায় ৩-০ গোলের ব্যবধানে হারিয়েছে মেসির দল।
এর আগে ২০১৪ সালের বিশ্বকাপের ফাইনালের পর আবারো মেসির সামনে হাতছানি দিচ্ছে বিশ্বকাপ ট্রফি জয়ের। বর্তমান বিশ্বসেরা সবচেয়ে জনপ্রিয় ফুটবল যাদুগর দুর্দান্ত মেসি যেভাবে নিজের দেশ আর্জেন্টিনার দলকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছে তাতে এবার বিশকাপ ট্রফি তার দিকে হাতছানি দিচ্ছে।
দুই পরিবর্তন নিয়ে এদিন একাদশ সাজান আর্জেন্টাইন কোচ স্কালোনি। কিন্তু ম্যাচ যত গড়িয়েছে ততই মিডফিল্ডে আধিপত্য দেখিয়েছে ক্রোয়েশিয়া।ম্যাচের শুরু থেকে দাপটের সহিত ক্রোয়েশিয়া বল দখলে রাখলেও গোলের সুযোগ তৈরি করতে পারতেছিল না ক্রোয়েশিয়া। কিন্তু সময়ের সাথে সাথে কৌশলিক হয়ে উঠে আর্জেন্টিনা।
খেলার ২৬ মিনিটে প্রথম সুযোগ পায় আর্জেন্টিনা। ডি বক্সের বাইরে থেকে এনজো ফার্নান্দেজের দূরপাল্লার শট রুখে দেন লিভাকোভিচ। ম্যাচের ৩৩ মিনিটে পেনাল্টির মাধ্যমে এগিয়ে যায় আর্জেন্টিনা। ম্যাচের ৩২ মিনিটে এনজো ফার্নান্দেজের দারুণ এক পাস থেকে ডি বক্সের ভেতর বল পান আলভারেজ। আলভারেজকে ফাউল করে বসেন ক্রোয়েশিয়ার গোলরক্ষক লিভাকোভিচ। রেফারি সাথে সাথে পেনাল্টির বাঁশি বাজান।
নিখুঁত কিক থেকে গোল করে আর্জেন্টিনাকে ৩৩ মিনিটে ১-০ গোলের ব্যবধানে এগিয়ে দেন লিওনেল মেসি। এই বিশ্বকাপে এটি তার ৫ম গোল। তাছাড়া সব মিলিয়ে বিশ্বকাপে ১১টি গোল করলেন মেসি।
এই গোলের রেশ কাটতে না কাটতে হুলিয়ান আলভারেজের দারুণ গোলে ৩৯ মিনিটেই এগিয়ে গেল আর্জেন্টিনা।গোলের ব্যবধান আর্জেন্টিনা- ২, ক্রোসিয়া-০।মাঝমাঠ থেকে মেসির জাদুকরী পাস থেকে বল পেয়ে দুর্দান্ত ক্ষিপ্র গতিতে বল নিয়ে ডি বক্সের ভেতর ঢুকে ক্রোয়েশিয়ার দুই ডিফেন্ডারকে টপকে বল নিয়ে ভেতরে ঢুকে লিভাকোভিচকে পরাস্ত করেন এই ম্যান স্ট্রাইকার। বিশ্বকাপে এটি তার ৩য় গোল।ম্যাচের শেষ দিকে আরো সুযোগ পেয়েছিল আর্জেন্টিনা। ৪৩ মিনিটে মেসির কর্নার থেকে তাগলিয়াফিকোর হেড দুর্দান্তভাবে রুখে দেন লিভাকোভিচ। প্রথমার্ধে ২-০ গোলে এগিয়ে থেকেই বিরতিতে যায় আর্জেন্টিনা।
বিরতি থেকে ফিরে আবারো মাঝমাঠের দখলে নেয় ক্রোয়েশিয়া। কিন্তু দলে যে বর্তমান বিশ্বসেরা সবচেয়ে জনপ্রিয় একজন ফুটবল জাদুকর আছে সেটা ভুলেই গিয়েছিল ক্রোয়েশিয়া।৫৯ মিনিটে এনজোর সঙ্গে ওয়ান টু ওয়ান অয়াসে ডি বক্সের ভেতরে ঢুকে মেসি বা পায়ের শট নিলে দারুণভাবে রুখে দেন লিভাকোভিচ।বল নিজেদের দখলে রাখলেও গোলের সুযোগই তৈরি করতে পারেনি ক্রোয়েশিয়া। উলটো ৭০ মিনিটে আর্জেন্টিনা আবারো গোল দিয়ে ৩-০ ব্যবধানে এগিয়ে যায়।
ম্যাচের ৭০ মিনিটে দারুণভাবে মাঝমাঠ থেকে একা বল নিয়ে ডিবক্সের ভেতরে ডিফেন্ডার ভার্ডিওলকে কাটিয়ে ডিবক্সের ভেতর আলভারেজকে পাস দিলে দারুণ ফিনিশিংয়ে আর্জেন্টিনাকে ৩-০ ব্যবধানে এগিয়ে দিলেন ফুটবল জাদুকর মেসি। বিশ্বকাপে এটি আলভারেজের ৪র্থ গোল। এবং মেসির ৮ম এসিস্ট।৩ গোলে পিছিয়ে থেকে গোল শোধের চেষ্টায় আক্রমণও করে ক্রোয়েশিয়া। ৭৬ মিনিটে পেরেসিচের দূরপাল্লার দারুণ শট সেভ করেন এমি মার্টিনেজ। ৭৮ নিনিটে আবারো ওরসিচের শট চলে যায় গোলবারের উপর দিয়ে।
ভ৮৪ মিনিটে ডি বক্সের বাইরে থেকে ফ্রি কিক পেলে দ্রুত কিক নিয়ে বল ডি বক্সের ভেতরে পান ম্যাকএলিস্টার। তার ডান পায়ের শট বাম গোল বারের সামান্য বাইরে দিয়ে চলে যায়।
শেষ দিকে ক্রোয়েটরা চেষ্টা করলেও গোলের সুযোগ তৈরি করতে পারেনি। ফলে ৩-০ গোলের জয়ে ক্রোরেশিয়া কে উড়িয়ে দিয়ে কোটি কোটি ভক্তদের উল্লাসে মাতিয়ে আবারো বিশ্বকাপের ফাইনালে আর্জেন্টিনা।